সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী  চির নিদ্রায় শায়িত হলেন নিজ গ্রামে

সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী চির নিদ্রায় শায়িত হলেন নিজ গ্রামে

মোফাজ্জল হোসেন ঃ


সাবেক রাষ্ট্রপতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী জানাজা  ৬ অক্টোবর রবিবার সকাল ১০ টায় শ্রীনগর উপজেলা স্টেডিয়ামে অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রধান নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডা. এ.  কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর (বি চৌধুরী) জানাজায় উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ ১ আসনের মাটি ও মানুষের নেতা সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, উপস্থিত ছিলেন শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সম্মানিত সভাপতি শহিদুল  মৃধা এবং শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম খাঁন, উপস্থিত ছিলেন,শ্রীনগর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপির সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মমিন আলী,সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন,সিরাজদিখান উপজেলা বিএনপির সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক এম হায়দার আলী আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মুন্সীগঞ্জ জেলা সেক্রেটারী মাওলানা এ.কে.এম. ফখরুদ্দীন রাজী। শ্রমিক কল্যান ফেডারেশন জেলা সভাপতি খিজির আ: সালাম,  সহ বিএনপি'র উপজেলা ও বিকল্পধারার শ্রীনগর- সিরাজদিখান উপজেলার নেতৃবৃন্দ।


গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৩ টা ১৫ মিনিটে নিজের প্রতিষ্ঠিত উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। 


বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া ছেলে মাহী বি. চৌধুরী তার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়ে এবং নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।


ফুসফুসে সংক্রমণ হওয়ায় গত ২ অক্টোবর সকালে বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে উত্তরা মহিলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেদিন তার মেয়ে ডা. শায়লা চৌধুরী জানান যে, তার বাবা আগে থেকেই স্কিমিক হার্ট ডিজিজেস ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।


খ্যাতিমান চিকিৎসক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে (প্রখ্যাত মুন্সেফ বাড়ি) নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ বাড়ি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মজিদপুর দয়াহাটায়। তার বাবা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহ-সভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।


বি. চৌধুরী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের অনুরোধে ১৯৭৮ সালে রাজনীতি শুরু করেন। তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং কেবিনেট মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং প্রথমে শিক্ষামন্ত্রী ও পরে সংসদ উপনেতা হন। ১৯৯৬ সালে তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ২০০১ সালে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং একই বছরের অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।


অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন।


২০০৪ সালের ৮ মে বি. চৌধুরী বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি দলটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছিলেন।


তার সহধর্মীনির নাম হাসিনা ওয়ার্দা চৌধুরী। অধ্যাপক চৌধুরী দুই মেয়ে এবং এক ছেলের জনক। তার বড় মেয়ে মুনা চৌধুরী পেশায় একজন ব্যারিস্টার। ছোট মেয়ে শায়লা চৌধুরী পেশায় চিকিৎসক এবং ঢাকার উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনা করেন। একমাত্র ছেলে মাহী বি. চৌধুরী রাজনীতিবিদ।


বাদ জোহর বীরতারা ইউপি মজিদপুর দয়হাটা কফিল উদ্দিন ইনস্টিটিউশন মাঠে সর্বশেষ নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক নির্ধারিত কবর স্থানে দাফন করা হবে।